2nd Wave Feminism
2nd Wave Feminism নিয়ে আলোচনা করার আগে আমাদের জানতে হবে যে Feminist মুভমেন্ট আবারো কেন আনতে হল? 1st Wave Feminism এরপর 2nd Wave Feminism কেন আনতে হলো? 1st Wave Feminism যেটা ছিল তা শুধুমাত্র এচিভ লিগ্যাল এন্ড পলিটিকাল ইক্যুউলিটি। ভোটাধিকার পাওয়ার পরে তাদের মতে সে লক্ষ্য অর্জিত হয়ে যায় এবং তারা মনে করতো রাজনৈতিক ইক্যুউলিটি পাওয়া গেলে সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাক্ষেত্রেও ইক্যুউলিটি চলে আসবে, এসব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য চলে যাবে। কিন্তু তাদের এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো।
1st Wave Feminism এর পর নারীদের জন্য কিছু চাকুরীর সুযোগ তৈরি হল, তাও কিন্তু খুবই লিমিটেড। তাদের জন্য সবক্ষেত্রে চাকুরী করার সুযোগ ছিল না,শুধুমাত্র নারীদের আচরণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু ক্ষেত্রেই তাদের চাকুরী করার সুযোগ দেয়া হল। যেমন- নারীরা অনেক কেয়ারিং,মমতাময়ী ইত্যাদির উপর লক্ষ রেখে নারীদের নার্স, শিক্ষক এ ধরণের পেশায় সুযোগ দেয়া হল। যদি একজন নারী ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী অথবা রাজনৈতিক নেতা হতে চাইলে সে সুযোগ ছিল না। আবার, নারীদের শিক্ষার সুযোগ তৈরি হলেও তাও ছিল লিমিটেড। একজন পুরুষ চাইলে যে কোন বিষয়ে পড়তে পারত কিন্তু একজন নারী শুধুমাত্র তাদের জন্য বাছাইকৃত কিছু বিষয়ে নিয়েই পড়তে পারতো।
তাহলে দেখা গেল 1st Wave Feminism এর পরে নারীদের জন্য কিছু সুযোগ তৈরি হলেও ব্যাপক বৈষম্য রয়ে গেছে তখনো সমাজে। তখন প্রয়োজন হল আরেকটি মুভমেন্ট বা আন্দোলনের আর সেটি 2nd Wave Feminism.
2nd Wave Feminism এ দুই ধরণের ফেমিনিষ্টের উদ্ভব হয় ক.লিবারেল এপ্রোচ ফেমিনিষ্ট, খ. র্যাডিকেল এপ্রোচ ফেমিনিষ্ট। আর এই দুই ধরণের ফেমিনিষ্ট থেকে নারী অধিকার আদায়, নারীদের বৈষম্যগুলো দেখার এবং সাথে সাথে সেগুলো থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে দু'রকম দাবী উত্থাপিত হয়।
লিবারেল এপ্রোচ মুলত 1st Wave Feminism এর বর্ধিত একটা অংশ। 1st Wave Feminism এ লিবারেল ফেমিনিষ্টেরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্যের প্রতি তাদের মুল ফোকাস দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন তারা দেখল শুধুমাত্র রাজনৈতিক লিঙ্গবৈষম্যের সমতা দিয়ে নারীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্য রয়ে গেছে তখন প্রয়োজন হলো 2nd Wave Faminism এ লিবারেল এপ্রোচ ফেমিনিজমের। আর এই লিবারেল এপ্রোচ ফেমিনিজমের শুরু হয় "Betty Friedan" এর বই "The Fiminine Mystique" প্রকাশের মাধ্যমে। যা প্রকাশিত হয় ১৯৬৩-তে।
Betty Friedan তার বইতে বলেন "পাবলিক লাইফে নারীদের কোনো পার্টিসিপেশান নেই, কারণ সমাজ মনে করে নারীরা গৃহের অভ্যন্তরেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এবং এখানেই তারা সুখী, এজন্য তারা পাবলিক লাইফে পার্টিসিপেশন করেনা।" Betty Friedan বলেন "এটি আসলে একটি মিথ সত্যটা হচ্ছে একজন মা হিসাবে, একজন বউ হিসাবে নারীরা পরিবারে একটি অসুখী, অতৃপ্ত ও অপরিপূর্ণ জীবন যাপন করে। এর কারণ তারা পরিবারের মাঝে একটি পরাধীন সত্তার মত জীবন যাপন করে, পরিবারে কোনো একটি রোল প্লে করে। কখনো মা, কখনো স্ত্রী, কখনো মেয়ের ভুমিকায় দেখা যায়, তাদের নিজস্ব কোনো রোল সেখানে নেই। এই কারণে নারীরা পরিবারে একটি অসুখী জীবন যাপন করে।" এর থেকে উত্তরণের জন্য Betty Friedan প্রস্তাব করেন পাবলিক লাইফে নারীদের জন্য সহাবস্থান। শিক্ষাক্ষেত্রে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য প্রত্যাহার করে তাদের সমান অধিকার দেবার কথা বলেন।
Betty Friedan ১৯৬৬ এ National Organization for Women(NOW) নামক এক অর্গেনাইজেশান দাঁড় করায় এবং এর মাধ্যমে অন্দোলন গড়ে তুলে এবং "Equal Right Amendment(ERA)" নামে বিল পাস করার জন্য চেষ্টা করে যা নারীপুরুষ লিঙ্গবৈষম্য দূর করে সমানাধিকার প্রতিষ্টার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই বিল এখনো পর্যন্ত পাস হয়নি আমেরিকাতে।
2nd Wave Faminism মুলত র্যাডিকেল এপ্রোচ ফেমিনিজম বলে কারণ লিবারেল এপ্রোচ ফেমিনিজম 1st Wave Faminism এর বর্ধিত অংশ। 2nd Wave Faminism এর মুভমেন্ট শুরু হয় ১৯৬৮ এ এবং এটি ১৯৮০ পর্যন্ত থাকে। ১৯৬৮ সালে 'মিস আমেরিকা' সুন্দরী প্রতিযোগীতার বিরুদ্ধে প্রোটেস্ট করে। তারা বলেন সুন্দরী প্রতিযোগীয় একজন নারীকে অবজেক্ট হিসাবে দেখা হয়। হাইহিল, লিপস্টিক এসবের মত প্রোডাক্ট দিয়ে ছোটবেলা থেকে নারীকে সুন্দরী হবার জন্য প্রতিযোগীতার দিকে ঠেলে দেয়া হয়। "Feedon Trash Can" নামক একটি প্রতিবাদী ডাস্টবিন বানিয়ে মেয়েদের অবজেক্ট বানানোর জিনিসগুলোকে(লিপিস্টিক, হাইহিল) তারা ছুঁড়ে ফেলে দেন।
উল্লেখ্য যে লিবারেল এপ্রোচ ফেমিনিষ্টরা মনে করতো নারীরা বৈষম্যের শিকার তাদের দাবী ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে নারী বৈষম্যহীনতা, আর র্যাডিকেল এপ্রোচ ফেমিনিষ্টরা মনে করে নারীরা শুধুমাত্র বৈষম্যের শিকার নয় তারা নিপীড়িতও এবং তারা নারীদের জন্য মানুষের মনে যে অভ্যন্তরীণ দৃষ্টিভঙ্গি(ট্রেডিশনাল,কালচারাল) তা থেকে পরিত্রাণের কথা বলে।র্যাডিকেল এপ্রোচ ফেমিনিষ্টরা মনে করে নারীদের সমাজের যে বাহ্যিক অবস্থান তা হয়ত কোনো আইন প্রণয়ন বা সংশোধন করার মাধ্যমে শেষ করা যাবে কিন্তু মানুষের মনে অভ্যন্তরীণ যে অবস্থান তা কীভাবে নির্মূল করা যাবে? এজন্য প্রয়োজন রিভ্যুলেশান। একাডেমিকভাবে নারীবাদ নিয়ে রিসার্চ প্রয়োজন। নতুন নতুন কনসেপ্ট ডেভালপ হয় র্যাডিকেল এপ্রোচ ফেমিনিস্টদের মাধ্যমে। পেট্রিয়ার্কি, জেন্ডার সেক্স ডিস্ট্রিংশন, পাব্লিক প্রাইভেট ডিভাইড এর মত নতুন নতুন ট্রার্মস আসে।
এসবকে সামনে নিয়ে আসেন ১৯৪৯ সালে "Simon de Beauvoir" তার "The Second Sex" এর প্রকাশের মাধ্যমে। তিনি প্রথম বলেন নারীদের সমস্যার মূল সমাজের অনেক গভীরে প্রোথিত, এটাকে শুধুমাত্র বৈষম্য দিয়ে বিচার করা যাবেনা। এ সংগ্রামকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ৭০ এর দশকে যখন "Kate Millet" এর "Sexual Politics", "Shulamith Firestone" এর "The Dialectics of Sex" এর মত বইগুলো একে একে প্রকাশিত হতে থাকে।
2nd Wave Faminism এ মূল ফোকাস ছিল নিপীড়নের উপর, তারা বলে পৃথিবীর যে কোন স্থানের, যে কোন শ্রেণীর মেয়েদের এক কমন অভিজ্ঞতা হলো 'মেল ডোমিনেন্স'। মেল ডোমিনেন্স দিয়েই পৃথিবীর সকল নারীকে একটা শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তারা বলে আইন পাস করে কিংবা আইন পরিবর্তন করে এর থেকে পরিত্রাণ সম্ভব নয় এর জন্য প্রয়োজন রিভ্যুলেশান। 2nd Wave Faminism মুভমেন্টকে তারা "Women's Liberation Movement" এর দিকে ধাবিত করে। তারা বলে এই সমাজের যত নিয়ম, রীতিনীতি, আইন এসব কিছু যারা তৈরি করেছে তারা প্রত্যেকেই পুরুষ এবং এইসব তৈরি করার সময় পুরুষেরই সুবিধার দিকেই লক্ষ রেখেই করা হয়, নারীদের সুবিধা অতিনগণ্য। তাই প্রয়োজন এসব বদলের যাতে নারীপুরুষ উভয়ের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা থাকে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন