কেন "শহুরে নারীবাদীগুলারে" গালি দিবেন:

১. সারাজীবন জাইনা আসছি মেয়েরা দুর্বল, কুসুমের ন্যায় কোমল, অবলা, পুরুষের সমান সক্ষমতা নাই ইত্যাদি। অতএব, পুরুষই শ্রেষ্ঠ। এই বজ্জাত নারীবাদীগুলা কোত্থেকে আইসা বলে, চাউলের বস্তা বহন করার ক্ষমতা দিয়ে যদি শারীরিক সক্ষমতা বিবেচনা করা হয় তবে হাতি হইতেছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাণি। হাত পা ব্রেইন এইগুলারে সিন্ক্রোনাইজ করে প্রডাক্টিভ ভাবে ব্যবহার করাই নাকি শারীরিক সক্ষমতার মাপকাঠি। এই দৃষ্টিকোণ থাইকা নাকি পোলা মাইয়া সব সমান। কেউ কারো চেয়ে শ্রেষ্ঠ না। কন তো, এইটা কুনু কথা হইলো? মাইয়ামানুষ কেমনে পোলাগো সমান হবে? এইটা কইলে পোলাগো ইজ্জত যায় না? 😢

২. আপনারা সবাই জানেন, পোলারা মায়ের পেটে ৯ মাস থাকে, মাইয়ারা থাকে ৪.৫ মাস। পোলারা মায়ের দুধ খায় ২ গ্যালন, মাইয়ারা খায় এক গ্যালন। অতএব, মাইয়ারা হইতেছে গিয়া পোলাগো অর্ধেক। কাজেই তাদের অধিকারও অর্ধেক হইবো। সোজা অংক না? কিন্তু মূর্খ নারীবাদীগুলা কি এই অংক বুঝে? তারা কয়, কেনে? আমরা অর্ধেক হবো কেনে? পুরুষের চাইতে কোন যোগ্যতা আমাদের কম? পুরুষ যতোটুকু অধিকার ও স্বাধীনতা পাবে, আমরা ততোটুকু অধিকার পাবো, স্বাধীনতা পাবো। আমরা দুই প্রজাতিই তো মানুষ। কন তো দেখি? এইটা কুনু যুক্তি হইলো? আরে বোকা, তারা হইতেছে গিয়া মাইয়া, মাইয়া আবার মানুষ হয়? এই কথা হুনছেন নি কোনোদিন?

৩. দেখেন ভাই, হাজার হলেও পোলারা হইতেছে সোনার চামচ। সোনার চামচে কি দাগ লাগে বলেন? মাইয়া মানুষ গা দেখিয়ে রাস্তায় হাঁটলে পোলাপাইন একটু আধটু দুষ্টামি করবো, গায়ে হাত দিবো, ইয়ে, আর জওয়ানি কা জোশ বেশি আইসা গেলে একটু আধটু ধর্ষণও করবো, এইটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। মাইয়ামানুষ হইতেছে কাঁচের বাসন। এদের গায়ে হাত দিলে মুখ লুকাই কানবে, ধর্ষণ করলে অপমানে আত্মহত্যা করবে, এইটাই তো স্বাভাবিক। অথচ বদমাইশ নারীবাদীগুলা কয়, যেমন ইচ্ছা তেমন পোশাক পরা নারীদের অধিকার। যদি কারো সমস্যা হয় তবে তার দায়িত্ব চক্ষু সরায়ে নেওয়া। এরপর যদি কেউ উল্টাপাল্টা করতে আসে, তবে নাকি মাইয়াগো উচিত জায়গা বরাবর লাত্থি দেওয়া। এইসব বজ্জাত নারীবাদীগো প্রশ্রয় পাইয়া মাইয়ারা আজকাল ভিড়ের মধ্যে গায়ে হাত দিলে সেফটিপিন ফুটায়ে দেয়, এন্টি কাটার দিয়া পোঁচ দেয় (আমিও গুঁতা খাইসি😢)। আহারে, দিলে রহম নাই রে, দিলে রহম নাই। 😥😥হেরা আরো বলে, ধর্ষণ করলে নাকি কলংক ধর্ষকের, ধর্ষিতার না। কন তো দেখি, কেমুন বেকুবের মতো কথাবার্তা! সোনার চামচে আবার কলংক লাগে নি!

৪. জন্ম থেইকা দেইখা আসছি, মাইয়াগো জন্ম হয় শ্বশুরবাড়িতে। আমার মার জন্ম শ্বশুরবাড়িতে, আমার দাদির জন্ম শ্বশুরবাড়িতে, আমার দাদীর দাদীর জন্মও শ্বশুরবাড়িতে। মাইয়ারা শ্বশুরবাড়িতে থাকবে, স্বামীর সেবা করবে, স্বামীর বাপ মার সেবা করবে, স্বামীর আত্মীয়স্বজনের সেবা করবে, স্বামীর বাসার পোষা প্রাণিরও সেবা করবে। কিন্তু এই শয়তানের চ্যালা নারীবাদীগুলা কয় নারীরাই কেন এই কাজ করবে! বরের বাপ মায়ের সেবা করেই যদি তাদের জীবন যায় তবে তাদের বাপ মায়ের সেবা করবে কে? পোলারাও আইসা শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করুক! মায়ের পেটে কি তারা একলাই জন্মাইছে, আমরা জন্মাই নাই? কন তো কেমন আচানক কথাবার্তা! এইসব নারীবাদীগো কথায় আমরা মাইয়াদের শ্বশুরবাড়িতে জন্মগ্রহণের এত সোন্দর "প্রথা" বাদ দিয়া দিমু? 😢

৫. আমরা জানি, "স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত"। স্বামী যেমনে ইচ্ছা তার স্ত্রীরে "ব্যবহার" করবে, ইচ্ছা হইলে বিছানায় ডাকবে, ইচ্ছা হইলে লাত্থি দিবে। আর স্ত্রীর শরীরের যে জায়গায় স্বামী মারবে, সেই জায়গা বেহেশতে যাবে। এইটা তো আমরা সবাই জানি। স্বামী স্ত্রীরে মাইর না দিলে কে মাইর দিবে? পাশের বাসার আবুইল্যার বাপ? অথচ দেখেন, নারীবাদীগুলা এই ন্যায়বিচারটাও মানতে রাজি না। তারা কয়, স্বামী ইচ্ছা করলেই স্ত্রীর গায়ের উপর চইড়া বসতে পারবে না। স্ত্রীরও ইচ্ছা থাকতে হবে। কতোবড়ো অবিচার পুরুষের উপর! আরে, মাইয়ামানুষের আবার যৌন ইচ্ছা আছে নি! যাদের যৌন ইচ্ছা আছে তারা খারাপ মাইয়ামানুষ। ঘরের বউগো এইসব ইচ্ছা টিচ্ছা থাকে না। পুরুষ কামাই করবে, স্ত্রী খাবে, আর বদলে "সার্ভিস" দেবে। অথচ দুষ্ট নারীবাদীগুলা কয়, মাইয়াদের দুইটা শক্তসমর্থ হাত আর একটা কার্যক্ষম ব্রেইন থাকতে জামাইয়ের উপর বসে খাবে ক্যান! তারা নিজেরা রোজগার করবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে, আর যে পুরুষ মারধর করবে, নির্যাতন করবে, তার সংসারে লাথি দিয়ে বের হয়ে আসবে। কেমন জালিম, আহারে! পুরুষ জাতের কতোবড়ো অপমান। এইসব নারীবাদীগুলারে মানুষ গালি দিবে না তো কি চুম্মা দিবে?

অতএব ভাইসব এবং বোনসব, আসেন, গান গাই,
"সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
নারীবাদী দেখে যেন কষে দেই গালি।"

জনস্বার্থে, "ফেসবুক পীর এবং তার মুরিদবৃন্দ"।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

2nd Wave Feminism

দাউদ হায়দারের এরকম অশালীন কবিতা লেখার পেছনের গল্প-

প্রসঙ্গঃ দাউদ হায়দারের ছিনাল নারীবাদী কবিতা